ভূমিকা
দেশ হিসেবে আমরা বিভিন্ন মাপকাঠিতে অন্যান্য অনেক দেশ থেকে পিছিয়ে থাকলেও, একটি দিকে আমরাও এগিয়ে এসেছি অনেকখানি। আর সেটি হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার। দেশের আনাচকানাচে মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে গেছে উন্নত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও ইন্টারনেট সেবা। এরকম একটা সময়ে পৃথিবীর সবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সব স্তরের মানুষের জন্যই নতুন যে বিদ্যাটি জানা নিতান্ত প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হলো- কম্পিউটার প্রোগ্রামিং। বয়স, ক্যারিয়ার ও শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্বিশেষে প্রোগ্রামিংয়ের জ্ঞান ছাড়া বর্তমান বিশ্বে টিকে থাকা প্রতিদিনই ‘গতকালের চেয়ে কঠিন’ হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রোগ্রামিং শিক্ষার প্রসারও হচ্ছে ধীরে ধীরে। দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আয়োজিত হচ্ছে প্রোগ্রামিং ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও প্রতিযোগিতা। প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থী প্রোগ্রামিং শিখতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
তবে, এই বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর জন্য যথাযথ গাইডলাইন পাওয়া যেমন কঠিন, ভুল পথে পরিচালিত হওয়াটা তেমনই সহজ। সবার মনেই প্রথমে যেসব প্রশ্ন জাগে তা হলো, কেন শিখব? কী কাজে লাগবে? কীভাবে শিখব?কতটুকু শিখব? কোথা থেকে শিখব? শেখার পরে কী করব? ইত্যাদি।
এই বইয়ে লেখক তামিম শাহ্রিয়ার সুবিন এই বিষয়েই দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সুবিন ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় প্রায় এক দশকের। দীর্ঘদিন তাঁর সান্নিধ্যে থেকে কাজ করেছি আমি। তাঁর কাছ থেকে শিখেছি অনেক কিছু। জটিল বিষয় সাবলীল ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে আলোচনা করার অদ্ভুত গুণ রয়েছে তাঁর।
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিগ ডেটা, মেশিন লার্নিং, আইওটি, আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স রোবটিক্স ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখতে পাই। আবার কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে ব্যাপক অস্থিরতা দেখি ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং বিষয়ে। এই অস্থিরতাটাও অবশ্য অস্বাভাবিক নয়। কেননা, চারদিকে এই ‘বাজওয়ার্ড’ শিক্ষার্থীরা শুনছে, তারা কৌতূহলী হচ্ছে, কিন্তু ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না, এগুলোর কাজ কী? কীভাবে শিখতে হবে? শিখে কী লাভ হবে ইত্যাদি। সুবিন ভাই এই প্রাথমিক প্রশ্নগুলোরও উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এ বইয়ে ।
সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে স্কুল-কলেজ-পলিটেকনিক-বিশ্ববিদ্যালয়-স্বশিক্ষিত ইত্যাদি বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাজীবন থেকে কর্মজীবন পর্যন্ত একটি রোডম্যাপ লেখক উপস্থাপন করেছেন।
বাংলাদেশে যেকোনো ক্যারিয়ার ট্র্যাকের শিক্ষার্থীই এ বই থেকে একটি যথাযথ নির্দেশনা পাবে। কোন বিষয়টি শেখা বেশি জরুরি, কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ, কোন বিষয়ের আগে কোন বিষয় শিখতে হবে- এ-সংক্রান্ত সুচিন্তিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বইটিতে। পরামর্শগুলো ঠিক ঠিক মেনে চলতে পারলে শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিজীবন, শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনে সফল হতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস।
আমার পক্ষ থেকে লেখকের জন্য রইল সাধুবাদ এবং সব শিক্ষার্থীর জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।
তাহমিদ রাফি,
প্রধান নির্বাহী, দ্বিমিক কম্পিউটিং (http://dimikcomputing.com)
সম্পাদক ও প্রকাশক, দ্বিমিক প্রকাশনী (http://dimik.pub)
Reviews
There are no reviews yet.