ভূমিকা
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম প্রোগ্রামিং নিয়ে অনেক আগ্রহী। ইন্টারনেটে বিভিন্ন ফোরামে, ফেসবুক গ্রুপে তারা অনেক কিছু জানতে চায়, অনেক ব্যাপারে দিকনির্দেশনা চায়। আমি প্রায়ই দেখি অনেক অযোগ্য লোক সেসব প্রশ্নের উত্তর দেয় এবং এতে তরুণরা বিভ্রান্ত হয়। আর যেহেতু দিকনির্দেশনামূলক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর নেই, তাই উত্তরের গুণগত মান যাচাইয়েরও কোনো ব্যাপার নেই। ইন্টারনেটে-ফেসবুকে যে কেউ যা খুশি বলতে পারে। তো এটি একটি সমস্যাই বটে, কারণ যারা সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারত, তাঁদের হয়ত অত সময় নেই যে সারাদিন ইন্টারনেটে-ফেসবুকে বসে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাবে। তো এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমি একটি বুদ্ধি বের করলাম। আমার পরিচিত যে সমস্ত প্রোগ্রামার দেশে-বিদেশে কাজ করছেন এবং আমার মতে যাদের কাছ থেকে পরবর্তী প্রজন্মের দিকনির্দেশনা পাওয়া উচিত, তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করলাম। তালিকা বেশ বড় হয়ে গেল। সেখান থেকে ছয়জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে আমার ব্লগে প্রকাশ করলাম। সেই সাক্ষাৎকারগুলো পড়ে আমি নিজেই অনেক অনুপ্রাণিত হই এবং উপলব্ধি করি যে এগুলো বাংলাদেশের প্রোগ্রামিং-উৎসাহী প্রজন্মের কাছে পৌঁছানের জন্য বই হতে পারে সেরা মাধ্যম। তারপর আরো ছয়জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে বুঝতে পারলাম যে তালিকার সবার সাক্ষাৎকার নিতে গেলে বইটি কখনোই আলোর মুখ দেখবে না। তাই আপাতত বার জনের কথা দিয়েই বইটি বের করতে হচ্ছে।
সাক্ষাৎকারগুলো পড়লে কিছু বিষয় পরিষ্কার হয়, যেমন: সাফল্যের কোনো শর্টকাট নেই, প্রোগ্রামিং সহজে শেখার কোনো উপায় নেই। আর যারা কম্পিউটার সায়েন্স পড়ছে, তারা কেবল প্রোগ্রামিং করবে কিন্তু অন্য বিষয়গুলো পড়বে না, সেই ভুল ধারণাও সাক্ষাৎকারগুলো পড়লে ভাঙ্গবে। আর আমাদের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির তথাকথিত নেতারা প্রায়ই অভিযোগের সুরে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস আধুনিক নয়, যুগপযুগী নয়। কিন্তু চার বছরের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেই সিলেবাস আছে, তা যথেষ্টই আধুনিক এবং সেগুলো পড়েই কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা মাইক্রোসফট, গুগল, ফেসবুক-এর মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। তারা বরং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর পাঠক্রম ও পাঠ্যপুস্তক উন্নয়নের দাবি জানাতে পারেন, যাতে করা আরো অনেক ছেলেমেয়ে আমাদের সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগ পায়, আর সফটওয়্যার কোম্পানীগুলোও দক্ষ প্রোগ্রামার পায়।
যেই ১২ জন কষ্ট করে সময় দিয়েছেন, আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন, তাঁদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আর বইটি প্রকাশের জন্য আলমগীর ভাই অনেক পরিশ্রম করেছেন, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে প্রোগ্রামারদের কথা পড়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে। সেই সাথে তাদের শিক্ষক ও অভিভাবকরাও যদি বইটি পড়ে ফেলেন, তাতে তারা নিজেরাও আলোকিত হবেন। প্রোগ্রামিংয়ের আলোয় উদ্ভাসিত হোক বাংলাদেশ।
তামিম শাহরিয়ার সুবিন,
গ্র্যাব আর এন্ড ডি সেন্টার, সিঙ্গাপুর।
আগষ্ট, ২০১৬।
https://fb.com/tamim.shahriar.subeen
https://twitter.com/subeen
ইমেইল : book@subeen.com
Reviews
There are no reviews yet.